মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার জেলায় কার্যত কোনও বাসই চলাচল করবে না। সভায় লোক আনার জন্যে সরকারিভাবে তো বটেই তৃণমূলও প্রচুর বাস তুলে নিয়েছে। আবার পুরনো রেল সেতু ভাঙার জন্যে বর্ধমান স্টেশনের উপর দিয়ে যাওয়া হাওড়া লোকাল, আসানসোল, রামপুরহাট লোকাল ট্রেন অনেকগুলি বাতিল করা হয়েছে। বাস ও ট্রেনের অপ্রতুলতার জন্যে আজ, বৃহস্পতিবার যাত্রীদের দুর্ভোগের মধ্যেই পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার ব্যস্ত সময়ে ট্রেন চলাচল যাতে স্বাভাবিক থাকে, তার জন্যে রেলের সঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা কথাও বলছেন।
জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিক (আরটিও) অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “যাত্রীদের যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্যে রাস্তায় বাস থাকবে।“ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় সভায় ৩০ হাজারের মতো লোক নিয়ে আসা হচ্ছে। তারজন্যে জেলা প্রশাসন সব ব্লকে বাস পাঠাচ্ছে, এ ছাড়াও বেশ কিছু বাস ‘রিজ়ার্ভ’ রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে জেলা প্রশাসনই ৯৫৪টি বাস মজুত রাখছে। প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, জেলায় থাকা ৭১১টি বাসের মধ্যে গোটা ৫০টি বাস সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে। বাকি বাস বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি ও বাঁকুড়া থেকে ভাড়া নিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের জেলা প্রশাসন। আর জেলার বাসগুলিকে তুলে নিয়েছে তৃণমূল। জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলও জানিয়েছে প্রায় হাজারের উপর বাসে করে তারা মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক নিয়ে আসবেন।
তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্যে মানুষের মধ্যে চাহিদা রয়েছে। তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী সভায় নিয়ে আসা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সে জন্যে প্রতিটি ব্লক থেকে বাসে করে তো বটেই অনেকে হেঁটেও সভাস্থলে আসবেন। আমাদের আশা, লক্ষাধিক মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় আসবেন।“ ইতিমধ্যে তৃণমূলের তরফে বেশ কয়েকবার জেলাতেই বৈঠক হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সভাস্থলের গায়েই পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে সভার শেষে বাসে উঠতে বেশি সময় লাগবে না। তবে সাধারণ মানুষজনের অভিজ্ঞতা, দুপুর ১২টার পর থেকেই বর্ধমান স্টেশনের উড়ালপুল থেকে গোলাপবাগ, নবাবহাট রোড কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। যেখান সেখান বাস, গাড়ি, ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়ে। সাইকেল বা হেঁটেও যাতায়াত করা যায় না।
এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্যে সকাল আটটা থেকে বর্ধমান শহর লাগোয়া ১৯টি রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্যে নির্দেশিকা জারি করেছেন জেলাশাসক। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, বাস, ট্রাক, গাড়ি, মালবাহী গাড়ি যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হবে অথবা অন্য রুট দিয়ে বের করে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সভা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ জারি থাকার কথা বলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শহরের ভিতর টোটো, গাড়ি কিংবা মোটরবাইকও যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সভা চলাকালীন নবাবহাট থেকে উল্লাস পর্যন্ত দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকছে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ছ’লেনের কাজ চলছে, সেই কাজও মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বন্ধ রাখার জন্যে প্রশাসনের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে।
যান নিয়ন্ত্রণ—–
★বর্ধমান-কালনা রোডের হাটগোবিন্দপুর,আটাগড় মোড় ।
★বর্ধমান-কাটোয়া রোডের ৬ মাইল, দেওয়ানদিঘি, বর্ধমান রেল উড়ালপুল।
★বর্ধমান শহরের গোলাপবাগ, নবাবহাট মোড়, বীরহাটা, তেলিপুকুর মোড়, কানাইনাটশাল মোড়, উল্লাস মোড়,ঝিঙুটি মোড়।
★দেওয়ানদিঘি থানার হলদি মোড়, রায়না থানার বাঁকুড়া মোড়, মোঘলমাড়ি,মাধবডিহির মনিয়ারঢাল,খণ্ডঘোষের মেটেডাঙা।
★এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গাতে টোটো,মোটর ভ্যান, গাড়ি মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
(সূত্র:জেলা প্রশাসন)